শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

দশ বছর ধরে জলাবদ্ধতায় অনাবাদি দুই হাজার একর জমি, জলাবদ্ধতা নিরসনে ক্যানেল সংস্কার শুরু

দশ বছর ধরে জলাবদ্ধতায় অনাবাদি দুই হাজার একর জমি, জলাবদ্ধতা নিরসনে ক্যানেল সংস্কার শুরু

 

মাসুদ রানা,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি; দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা গোয়ালডিহি ইউনিয়নে প্রায় দশ বছর ধরে জলাবদ্ধতায় অনাবাদি হয়ে পড়ে রয়েছে দুই হাজার একর কৃষি জমি। এতে চাষাবাদ না হওয়ায় সংকটে ওই এলাকার কৃষকরা। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ওই ইউনিয়নের যোতরঘু এলাকা থেকে নলবাড়ি পর্যন্ত প্রায় ০৭ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ক্যানেল সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।

সোমবার (২৪ জুলাই) বিকেলে গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে যোতরঘু এলাকয় ক্যানেল সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য/সদস্যা ও ওই এলাকার কৃষকগণ।

জানা যায়, আবর্জনা ও কচুরিপানায় ভরাট হয়ে বর্ষাকালে পানি নিষ্কাসন বন্ধ হয়ে যায় নলবাড়ী বিল হতে দুবলিয়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার জায়গা। এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় দশ বছর ধরে দুই হাজার একর জমি বর্ষাকালে জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশে ০৭কিলেমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৫ফিট প্রশস্ত করে ক্যানেল খননের পরিকল্পনা করা হয়। এতে জলাবদ্ধতা নিরসনের মাধ্যমে ওই এলাকার কৃষিজমিগুলো চাষাবাদের উপযোগী হবে। এই খবর শুনে স্বস্তিতে ওই এলাকার চাষীরা৷ দীর্ঘদিন পর তাদের জমিতে আরও চাষাবাদ হবে জেনে হাসি ফুটেছে ওই এলাকার কৃষকদের মুখে।

স্থানীয় কৃষক সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, ক্যানেলের আশেপাশে আমার প্রায় পাঁচ একর জমি আছে। দশ বছর ধরে বর্ষা আসলেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে ক্যানেলের দুই পাশে শত শত একর জমি অনাবাদি থেকে যেত। যার ফলে ওই মৌসুৃমে আমাদের কষ্টে দিনযাপন করতে হতো। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ক্যানেল সংস্কার হলে আমরা আবারও চাষাবাদ করতে পারবো ভেবেই আনন্দ লাগছে। এজন্য কৃষকরা আমরা ইউনিয়ন পরিষদ কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

একই এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, অতীতে দীর্ঘ সময় ধরে আমরা এই জমিগুলোতে চাষাবাদ করতাম। কিন্তু কয়েক বছর ধরে জলাবদ্ধতায় বর্ষা মৌসুমে আমরা চাষাবাদ করতে পারি না। ফলে অর্থনৈতিক ভাবেও আমরা কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়ি। এখন খাল সংস্কারের উদ্যােগ নেয়ায় জলাবদ্ধতা হতে মুক্তি পাবো এবং আমরা আবারও চাষাবাদ করতে পারবো। এজন্য আমরা কৃষকরা অনেক আনন্দিত।

ইউপি সদস্য নুর ইসলাম বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরেও কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ক্যানেল সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এতে এই অঞ্চলের মানুষের চোখেমুখে স্বস্তির নিঃশ্বাস দেখা গেছে। আশা করি তারা এই মৌসুমেই চাষাবাদ করতে পারবেন।

সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা একটি অভিশাপ স্বরুপ। দীর্ঘদিন ধরে এ জলাবদ্ধতায় কৃষকদের দুঃখ দুর্দশার কথা উপলব্ধি করে খাল সংস্কার জরুরি মনে করি। জনগণের ভোগান্তি লাঘবে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু উর্দ্ধতন কারো সাড়া না পাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ক্যানেল সংস্কার কাজ শুরু করা হল। এই কাজ সফল করতে ক্যানেলের পার্শ্ববতী জমির মালিক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতা কামনা করছি।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন