বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, রেজি নং-৩৬)

জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্ণ

জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্ণ

মুক্তিনিউজ২৪.কম ডেস্ক : আজ ৭ এপ্রিল পঞ্চাশ বছর পূর্ণ করল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ। স্বাধীনতার পর স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭৩ সালের আজকের দিনে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছিল ঢাকার তেজগাঁওয়ের তৎকালীন জাতীয় সংসদ ভবনে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দুই বছর পর জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে এই সংসদ গঠিত হয়েছিল। প্রথম সংসদ গঠনের মাধ্যমে দেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের যাত্রা শুরু হয়।

তবে বছর দুয়েক পর রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির শাসনব্যবস্থায় ফিরে যায় দেশ। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার পর সামরিক শাসনে ব্যাহত হয় গণতন্ত্রের যাত্রা। প্রথমে জিয়াউর রহমান এবং পরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশে সামরিক তন্ত্র কায়েম করেন। দীর্ঘ আন্দোলনের পর ১৯৯১ সালে দেশে আবার সংসদীয় শাসনব্যবস্থা চালু হয়। এরপর থেকে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থা চলছে। তবে মাঝে ২০০৭ সাল থেকে প্রায় দুই বছর দেশে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল।

জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে বিশেষ অধিবেশন। এটা চলতি একাদশ সংসদের ২২তম এবং এ বছরের দ্বিতীয় অধিবেশন।

গতকাল বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সব সংসদ সদস্যকে স্বাগত জানান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের ও জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে স্পিকার বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৫০ বছর ও সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছি। ১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংসদ অধিবেশনে ভাষণ দেন। শুক্রবার (আজ) সেই মাহেন্দ্রক্ষণে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এই মহান সংসদে স্মারক বক্তৃতা দেবেন। ’

সবার অংশগ্রহণে সংসদের বিশেষ অধিবেশন কার্যকর ও প্রাণবন্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অধিবেশন শুরুর আগে গতকাল সংসদ ভবনে সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শুরু হওয়া বিশেষ অধিবেশনটি শেষ হবে আগামী রোববার। কমিটির সভাপতি ও সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে কমিটির সদস্য, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা অংশ নেন।

বিশেষ অধিবেশনে আজ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্মারক বক্তৃতা দেয়ার পরদিন অর্থাৎ আগামীকাল শনিবার কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধিতে সাধারণ আলোচনার জন্য সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। প্রধানমন্ত্রী সেটি উত্থাপন ও বক্তব্য রাখার পর সংসদ সদস্যরা এই আলোচনায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর আনা প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হবে। কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ শুক্রবার ছাড়া সংসদের বৈঠক সকালেই শুরু হবে।

সংক্ষিপ্ত স্বাগত বক্তব্য শেষে স্পিকার চলতি অধিবেশনের জন্য সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেন। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন এইচ এন আশিকুর রহমান, আসাদুজ্জামান নূর, মো. মকবুল হোসেন, কাজী ফিরোজ রশীদ ও কানিজ ফাতেমা আহমেদ। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা অগ্রবর্তিতার ভিত্তিতে সংসদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।

সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়নের পর স্পিকার সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এসময় স্পিকার বলেন, ‘বিগত অধিবেশনের পর আমরা দুই জন সাবেক মন্ত্রী ও সাত জন সাবেক সংসদ সদস্যকে হারিয়েছি। তারা হলেন সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, সাবেক তথ্য ও পাটমন্ত্রী হাবিব উল্লাহ খান এবং সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরে আলম সিদ্দিকী, রেজা আলী, মো. দেলোয়ার হোসেন, সামসুল আলম প্রামাণিক, মো. মোজাম্মেল হক, আনোয়ারুল হোসেন খান চৌধুরী ও এনামুল হক। ’ তাদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব আনা হয়।

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন পৃথিবীর দৃষ্টিনন্দন আইনসভা ভবনের একটি। রাজধানী ঢাকার শের-ই-বাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার আয়তন ২১৫ একর। দৃষ্টিনন্দন এ ভবনের নকশা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত স্থপতি লুই আই কান। সংসদ ভবন এলাকাকে প্রধান ভবন, দক্ষিণ প্লাজা ও প্রেসিডেন্সিয়াল প্লাজা এই তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। সংসদের পেছন দিকে ক্রিসেন্ট লেক নামে একটি নান্দনিক জলাধার রয়েছে। সংসদের মূল ভবনের পাশাপাশি রয়েছে উন্মুক্ত সবুজ পরিসর, মনোরম জলাধার ও সংসদ সদস্যদের কার্যালয়।

১৯৬১ সালে ৯ তলা এ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ইতিহাসের নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি এ ভবনের উদ্বোধন করা হয়।

বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন