মরদেহের টুকরো ফেলা হয় খালে-ভাঙড়ে, গাড়িচালকের চাঞ্চল্যকর তথ্য
মুক্তিনিউজ২৪ ডট কম ডেস্ক : ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বলছে- এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ড পূর্ব পরিকল্পিত। পূর্ব শত্রুতার জেরে হত্যা করা হয়েছে তাকে। ঘটনার মূলহোতা বাংলাদেশি আমেরিকান আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিন। তবে হত্যাকাণ্ডটি বাস্তবায়ন করেছেন আমানউল্লাহ ওরফে শিমুল।
ডিবির তথ্যানুযায়ী, মাসখানেক আগে ঢাকার গুলশান ও বসুন্ধরার বাসায় বসে খুনের ছক আঁটা হয়। পরিকল্পনা মতো সুন্দরী নারী দিয়ে ‘হ্যানি ট্র্যাপ’ সাজিয়ে ভারতের কলকাতায় নেয়া হয় এমপি আনারকে। এরপর সেখানকার এক সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে ফ্ল্যাট ভাড়া নেন আনারের বাল্যবন্ধু শাহিন। সেই ফ্ল্যাটে ঢোকার ২০ মিনিটের মধ্যে হত্যা করা হয় তাকে।
এ ঘটনায় ভারতের কলকাতা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, খুনের আগে লাশ গুমের পরিকল্পনা সাজান খুনিরা। এ জন্য তারা ট্রলি ব্যাগ, চাপাতি, ব্লিচিং পাউডার, পলিথিনসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে রাখেন। ১৩ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে আনোয়ারুলকে হত্যার পর লাশ টুকরা টুকরা করে ব্যাগে ভরে সরানো হয়েছে। এর কিছু অংশ কলকাতার একটি খালে ফেলা হয়েছে। কলকাতার পুলিশ খুনিদের ভাড়া ফ্ল্যাটের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এবং ঢাকায় গ্রেফতার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে কলকাতায় বাংলাদেশি এমপি হত্যাকাণ্ড ঘিরে একাধিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। মূলত প্রশ্ন উঠছে— খুনের সঙ্গে যুক্ত কারা? কেন ভারতে নিয়ে খুন করা হলো তাকে? হত্যার পর মরদেহ ফেলা হয়েছে কোথায়?
সূত্র বলছে— আনার গত ১৩ মে নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটে ঢোকেন। এর ২০ মিনিটের মধ্যেই তাকে খুন করা হয়। প্রথমেই আনারের মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। মরদেহের পচন ঠেকাতে মরদেহটি টুকরো টুকরো করে কেটে ফ্রিজে রাখা হয়।
এরপর মরদেহের টুকরোগুলোতে হলুদ মেশানো হয়। মরদেহ লোপাটে অংশ নেওয়া গাড়িচালকের দেওয়া তথ্য বলছে— মরদেহের টুকরোগুলোর মধ্যে কিছু অংশ পোলেরহাট থানার ভাঙড় এলাকার কৃষ্ণমাটি গ্রামে ফেলা হয়েছে। জিরানগাছাতেও দেহাংশ ফেলা হয়েছে। এসব জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে সিআইডি। একই সঙ্গে তল্লাশি চালাবে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফও।
সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, মরদেহের বড় অংশ ব্যাগে ভরে ওই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে আসেন দুজন। এরপর আবার ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করেন তারা। আনারের অবস্থান করা ফ্ল্যাটে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। এছাড়া সেখান থেকে আঙুলের ছাপ ও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত জুবায়ের নামে একজনকে আটক করেছে সিআইডি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে আনারে মরদেহ লোপাটে তার যোগসাজশ রয়েছে কিনা।