দেশী ধান ভারতীয় মোড়কে প্যাকেটজাত করে বিক্রির চেষ্টা আটোয়ারীতে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার ভারতীয় ধানের বীজ উদ্ধার
আটোয়ারী (পঞ্চগড়) সংবাদদাতা
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার ভারতীয় মোড়কে প্যাকেটজাত দেশী ধান বীজ উদ্ধার করার সাত দিন পর অবশেষে সোমবার (৮ মে) ভোক্তা অধিকারে আইনে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করা হলো। উল্লেখ, সোমবার (১লা মে) দেশী ধান পান পাতা ব্রান্ডের ভারতীয় মোড়কে প্যাকেটজাত করে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাজারে নেয়ার সময় জনগন কর্তৃক ৩৮ বস্তা ধানের বীজ আটক করার ঘটনা ঘটলে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন তাৎক্ষনিকভাবে ঐদিন রাতে এক অভিযান পরিচালনা করেন। প্রায় ৬ ঘন্টা অভিযানে ফকিরগঞ্জ বাজারের আপন বীজ ভান্ডারের মালিক আনিছুর রহমান লেবুর বাড়ি, দোকান ও গোডাউন হতে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকার দেশী ধান ভারতীয় মোড়কে প্যাকেটজাত ১১১ বস্তা ধান বীজ উদ্ধার করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে অভিযানের পর এব্যাপারে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার খবর পাওয়া যায়নি। এনিয়ে কৃষক সাধারনের মনে নানা অসন্তোষ বিরাজ করছিল। ৫ লক্ষ টাকার ধান বীজ উদ্ধারের ঘটনার কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ কিংবা ওই ব্যবসায়ীর লাইসেন্স বাতিল না করে এক সপ্তাহ পর অবশেষে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা আদায়কে লোক দেখানো নাটকীয়তা বলে আখ্যা দিয়েছেন উপজেলার সচেতন মহল।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরজাহান খাতুন জানান, ঘটনার পর ৩ মে বুধবার আমি ও জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা আটোয়ারী থানায় উপস্থিত হয়ে মামলা দায়ের জন্য একটি এজাহার দাখিল করলেও ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মামলাটি অজ্ঞাত কারণে রেকর্ড করা হয়নি। তবে এটা জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তার কাজ সে কারনে আমি আর এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।
পঞ্চগড় জেলা বীজ ও প্রত্যয়ন এজেন্সী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, থানায় এজাহার করার পরও মামলা এন্ট্রি না হওয়ায় অবশেষে ৮ মে সোমবার পঞ্চগড় জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষনে অভিযোগ করা হয়। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পঞ্চগড় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মণ ওই দিন সন্ধ্যায় ফকিরগঞ্জ বাজারের মেসার্স আপন বীজ ভান্ডারে সত্বাধিকারী মোঃ আনিছুর রহমান লেবুকে দেশী ধান বীজ ভারতীয় মোড়কে প্যাকেটজাত করার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৪ ধারা ভঙ্গের দায়ে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আটককৃত বীজগুলো কি করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি দৈনিক মুক্তিনিউজকে জানান, সার বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা বীজ আইনে যে মামলার এজহার দায়ের করেছিলেন তা ছিল নন কগনিজেন্স (বিচারবিহীন) মামলা। ওই আইনে মুলতঃ কোন মামলা হয়না। এ কারণে মামলা এন্ট্রি করা হয়নি। আমি এজাহারের কপিটা সংশোধনের কথা বলেছি। কিন্তু পরবর্তীতে উনারা আর থানায় আসেন নি।
পঞ্চগড় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে দেশী ধানবীজ ভারতীয় প্যাকেটে প্যাকেটজাত করে কৃষকের সাথে প্রতারণায় দায়ে আপন বীজ ভান্ডারের সত্বাধিকারী মোঃ আনিসুর রহমান লেবুকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৪ ধারা ভঙ্গের দায়ে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুসফিকুল আলম হালিম এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, উপজেলা কৃষি অফিসার সহ জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তার কাছে জব্দকৃত ভারতীয় ধানের বীজগুলোর বিষয়ে অভিহিত করা হয়েছে। জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষনে অভিযোগ করার কারনে ভোক্তা অধিকার সংক্ষন কর্মকর্তা দেড় লক্ষ টাকা জরিমান করেছেন বলে আমি শুনেছি। #