বুধবার, ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -muktinews24(তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত, যার রেজি নং-৩৬)

রেলের ৭শ আবাসিক কোয়ার্টার বে-দখলে। রেল বিভাগ নিরব !

রেলের ৭শ আবাসিক কোয়ার্টার বে-দখলে। রেল বিভাগ নিরব !
মোঃলাভলু শেখ , লালমনিরহাট প্রতিনিধি: অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, লালমনিরহাটে ৭০০ টি রেল কোয়ার্টার দখলে নেয়ার  সন্ধান পাওয়া গেছে। উক্ত কোয়ার্টারে রাতের আঁধারে চলছে অসামাজিক কাজ। পাশাপাশি চুরি হয়ে যাচ্ছে ভবনের ইটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। সন্ধ্যার পর ভবনের পাশে চলতে গা শিউরে ওঠে। ভবনের ছাদ ও ওয়ালে ফাটল, জানালা-দরজা নেই, বিধ্বস্ত ছাদ, ইটের ফাঁকে ফাঁকে আগাছা ভর্তি আর রয়েছে আবর্জনার স্তুপ। মনে হয় কোয়ার্টারগুলো যেন ভুতুরে বাড়ী । এসব ভবন রেলওয়ের আবাসিক কোয়ার্টার। পুরনো এসব কোয়ার্টারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিছু অসহায় পরিবার জীবন যাপন করছেন। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে লালমনিরহাট রেলওয়ের অধিকাংশ আবাসিক কোয়ার্টারের এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে জেলায় ১২টি স্টেশন রয়েছে। এসব স্টেশনসংলগ্ন আবাসিক কোর্য়াটারে স্টেশন মাস্টারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারিদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসিক কোয়ার্টার রয়েছে। বর্তমানে যার অধিকাংশই বহিরাগতদের দখলে। দীর্ঘদিন ধরে এ ভবনগুলোতে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা না থাকায় যে যার মত দখল করে নিয়েছে। ফলে ভবন ধসের ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছে বহিরাগতরা। বহিরাগতদের দখলে থাকা এসব আবাসিক কোয়ার্টারে মাদক ব্যবসাসহ নানা অনৈতিক কাজের অভিযোগ অনেক পুরোনো। এসব কোয়ার্টার যেন ভুতের বাড়ি, কিন্তু দেখার নেই কেউ। রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কোয়ার্টারগুলো এখন সাধারণ মানুষের কাছে মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বার বার উচ্ছেদ করা হলেও কোর্য়াটারগুলো দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভবনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্মকর্তা। এসব কোয়ার্টারে রাতের আঁধারে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা যুবকরা কোয়ার্টারের ইট, রড, কাঠ, দরজা-জানালা অবাধে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে এভাবেই কিছুদিন ফায়ার সার্ভিস রোডে পুরাতন রেলওয়ে সিনেমা হলের সম্পদ লোপাট হয়েছে। দখলকারীরা কেবল আবাসিক কোয়ার্টারই নয় পাশাপাশি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগও নিয়েছেন। ফলে কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পদ খোয়া যাচ্ছে। রেল সুত্র জানান, রেল বিভাগীয় শহর লালমনিরহাটে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসিক কোর্য়াটারের সংখ্যা ৯১০টি এর মধ্যে  ৭০০টিই বেদখলে। লাল রংয়ের ওই ভবনগুলো ব্রিটিশ আমলের তৈরি। পুরনো এবং জীর্ণ অধিকাংশ ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কোয়ার্টারগুলোতে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি, থানা ও ফাঁড়ি পুলিশ, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, মুহুরী, মুদি দোকানদার, বাস-ট্রাক চালক, হেলপার, হকার, এনজিওকর্মী, শ্রমিক ও দিনমজুররা
দিব্বি বছরের পর বছর ধরে বসবাস করছেন এসব ভবনে। রেলওয়ে কোয়ার্টারে বসবাসকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা রেলওয়ের এক শ্রেণির কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাসাজষে অলিখিত চুক্তির ভিত্তিতে মাসিক ভাড়ায় কোয়ার্টারগুলোতে বসবাস করছেন। যে ভাড়ার টাকা কোনোদিনই সরকারের রাজস্ব খাতে জমা হয় না বলে জানা গেছে। এভাবে বছরের পর বছর তারা বসবাস করছেন।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার (ডিআরএম) আঃ সালাম জানান, আবাসিক কোয়ার্টার গুলো কোনভাবেই দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না। এক পাশে অভিযান চালালে আর এক পাশে দখল শুরু হয়।
তবে কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে অবৈধ দখলমুক্ত করতে আবারও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
লালমনিরহাট রেলওয়ে আবাসিক কোয়ার্টার রক্ষণা বেক্ষণ কর্মকর্তা জানান, বিধ্বস্ত কোয়ার্টারগুলো মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বিভাগ
শেয়ার করুন

মতামত লিখুন