আদমদীঘিতে কৃষকরা মরিচ চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বি হয়ে উঠেছেন
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় এবার মরিজের বাম্পার ফলন হয়েছে। রোগবালাই কম থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। বর্তমান উপজেলায় প্রতিকেজি মরিজ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে। প্রান্তিক কৃষকরা মরিজের ভাল দাম পাওয়ায় অনেক খুশি। উপজেলার কয়েকটি গ্রামের ভুমিহিন দরিদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা মরিচ চাষ করে এখন লাখপতি হয়েছে। তারা এখন আর অন্যের বাড়িতে কৃষি শ্রমিকের কাজ করেন না। সবাই অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বি হয়ে উঠেছেন।
উপজেলার সালগ্রাম, কোমারপুর, চক কোমার ভোগ, আমইল, শিবপুর, তেতুলিয়া, চাঁপাপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা ২০১৮ সাল থেকে বেলে দোআঁশ মাটিতে মরিচ চাষ শুরু করেন। তখন অভাব আর অনটন ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী। মাত্র ছয় বছরের ব্যবধানে পরিশ্রমী এসব প্রান্তিক ও ভুমিহিন কৃষকরা মরিচ চাষ করে তাদের ভাগ্য বদল করেছেন। অনেকের নিজের আবাদি জমি না থাকায় অপরের জমি পত্তনী নিয়ে মরিচ চাষ করে উৎপাদিত মরিচ বিক্রি করে এখন লাখপতি হয়েছেন। তাদের আর সংসারে অভাব অনাটন নেই।
সালগ্রামের এক ভুমিহীন কৃষক জহুরুল ইসলাম ২০১৮ সালে অপরের জমি পত্তন নিয়ে এক বিঘা জমিতে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে মরিচ চাষ করে ৬ লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। সে এবছর সাড়ে তিন বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন।
ওই গ্রামের মসজিদের ইমাম মাও: হামিদুল ইসলাম গত বছর মাত্র সাড়ে ৭শতক জমিতে মরিচ চাষ করে এক লাখ ৪৫ হাজার টাকায় উৎপাদিত মরিচ বিক্রি করেছেন। তার খরচ হয়েছিল মাত্র ৪০ হাজার টাকা। তিনি এবছরও ওই জমিতে মরিচ চাষ করে বিক্রি শুরু করেছেন। তিনি এবছরও অনুরুপ লাভবান হওয়ার আশা করছেন।
কৃষক মোস্তাকিন হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, গত বছর ১৮ শতক জমিতে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে মরিচ চাষ করে আড়াই লাখ টাকার বিক্রি করেছেন। সে এবারও ওই জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। জামাল হোসেন নামে অপর মরিচ চাষি গত বছর ১০ শতক জমিতে মরিচ চাষ করে এক লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছেন।
মরিচ চাষি রতন ইসলাম, জয়েন উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, বিপ্লব হোসেন, আনিছুর রহমান, বেলাল হোসেন, মাসুদ ও ছামাদসহ সালগ্রামের প্রায় ৭২জন ভুমিহীন ও প্রান্তিক কৃষক অপরের জমি পত্তন নিয়ে মরিচ চাষ করে লাখপতি হয়েছেন। মরিচ তোলার শুরুতে বাজারে ২০০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি করা হলেও বৃহপ্রতিবার (১৮ জুলাই) আদমদীঘি সদর, নসরতপুর ও কোমারপুরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে ৪০০ টাকা কেজি দামে মরিচ বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও উপজেলার কোমারপুর, আমইল, চকসোনার, কোমারভোগ গ্রামসহ আশপাশের গ্রামে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মরিচ চাষ। তাদের কঠোর পশ্রিমের ফলে আদমদীঘির বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা মরিচ চাষ করে এখন লাখপতি হয়েছেন।আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারি এ প্রতিবেদককে জানান, চলতি চছর ২৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা ছাড়িয়ে গেছে। রোগবালাই কম থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।